মেনু
স্বাগতম আমাদের টেক পোর্টালে। কারিগরি উন্নয়নের কাজ চলছে। শীঘ্রই নতুন ফিচার আসছে!
Breaking
ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে ধর্ষণের নাটক? শরীয়তপুরের ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা।জনসংখ্যা বাড়াতে রাতে বিদ্যুৎ-ইন্টারনেট বন্ধ!৫ বছরের প্রেম ও শারীরিক সম্পর্ক, শেষে প্রতারণা?থাইরয়েড থাকলে কি ফুলকপি-বাঁধাকপি বিষ? জেনে নিন আসল সত্যিগোসলের ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল: প্রেমিকের বাড়িতে নারীর অবস্থানব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে ধর্ষণের নাটক? শরীয়তপুরের ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা।জনসংখ্যা বাড়াতে রাতে বিদ্যুৎ-ইন্টারনেট বন্ধ!৫ বছরের প্রেম ও শারীরিক সম্পর্ক, শেষে প্রতারণা?থাইরয়েড থাকলে কি ফুলকপি-বাঁধাকপি বিষ? জেনে নিন আসল সত্যিগোসলের ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল: প্রেমিকের বাড়িতে নারীর অবস্থানব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে ধর্ষণের নাটক? শরীয়তপুরের ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা।জনসংখ্যা বাড়াতে রাতে বিদ্যুৎ-ইন্টারনেট বন্ধ!৫ বছরের প্রেম ও শারীরিক সম্পর্ক, শেষে প্রতারণা?থাইরয়েড থাকলে কি ফুলকপি-বাঁধাকপি বিষ? জেনে নিন আসল সত্যিগোসলের ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল: প্রেমিকের বাড়িতে নারীর অবস্থানব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে ধর্ষণের নাটক? শরীয়তপুরের ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা।জনসংখ্যা বাড়াতে রাতে বিদ্যুৎ-ইন্টারনেট বন্ধ!৫ বছরের প্রেম ও শারীরিক সম্পর্ক, শেষে প্রতারণা?থাইরয়েড থাকলে কি ফুলকপি-বাঁধাকপি বিষ? জেনে নিন আসল সত্যিগোসলের ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল: প্রেমিকের বাড়িতে নারীর অবস্থান
আজব খবর

ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে ধর্ষণের নাটক? শরীয়তপুরের ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা।

riazbaibd2025 December 16, 2025
ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে ধর্ষণের নাটক? শরীয়তপুরের ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা।

নিজস্ব প্রতিবেদক: শরীয়তপুরে গত কয়েকদিন ধরে টক অফ দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে কথিত এক শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা। প্রথমে ঘটনাটি একটি বর্বরোচিত অপরাধ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ঘটনার আড়ালে থাকা প্রকৃত সত্য এবং অভিযোগকারীর পরিচয় নিয়ে যে তথ্য বেরিয়ে এসেছে, তা তদন্তের মোড় সম্পূর্ণ ঘুরিয়ে দিয়েছে। ভুক্তভোগী নারী প্রথমে নিজেকে কলেজ শিক্ষার্থী দাবি করলেও তদন্তে জানা গেছে তিনি দুই সন্তানের জননী এবং ঘটনাটি নিছক বাড়ি ফেরার পথে ঘটেনি, বরং এর পেছনে রয়েছে দীর্ঘদিনের পরকীয়া সম্পর্ক ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। পালং মডেল থানায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ ইতিমধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

ঘটনার সূত্রপাত: ধর্ষণের প্রাথমিক অভিযোগ
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শরীয়তপুর শহরের বন বিভাগের কার্যালয়ের ভেতরে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পরপরই ভুক্তভোগী নারী দাবি করেন, তিনি একটি পরীক্ষা শেষে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় কয়েকজন বখাটে যুবক তাকে জোরপূর্বক টেনেহিঁচড়ে বনের ভেতর নিয়ে যায়। তার ভাষ্যমতে, যুবকরা তাকে মারধর করে টাকা দাবি করে এবং পরবর্তীতে তিনজন মিলে তাকে ধর্ষণ করে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ওই নারীকে আহাজারি করতে দেখা যায়। তিনি সমাজের বিবেক নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “কতগুলা লোক দাঁড়িয়ে দেখছিল, তাও কিছু বলে না। এটা কিসের সমাজ? দুইটা মহিলা দেখছে আমায় নিতে, ওইখানে দিয়ে খারাপ কাজ করছে, আমায় মারছে, তাও দেখছে। কেউ কিছু করলো না।” তার এই বক্তব্য মুহূর্তেই নেটিজেনদের হৃদয়ে দাগ কাটে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি ওঠে।

তদন্তে বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য
ঘটনার পরদিন বুধবার সকাল থেকেই পাল্টাতে থাকে দৃশ্যপট। পুলিশের তদন্ত এবং স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে, ভুক্তভোগী নারী আসলে কোনো কলেজ শিক্ষার্থী নন। তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের মা। যার সঙ্গে তাকে ঘটনাস্থলে দেখা গিয়েছিল, সেই যুবকটি তার শুধুই বন্ধু নন, বরং গত তিন বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ঘটনার দিন ওই নারী মিথ্যে অজুহাত দিয়ে বাড়ি থেকে বের হন এবং তার প্রেমিকের সঙ্গে মাদারীপুরে বেড়াতে যান। মাদারীপুর থেকে ফিরে তারা শরীয়তপুরের মনরা বাজার এলাকায় খাওয়া-দাওয়াসহ ঘোরাঘুরি করেন। ভুক্তভোগীর প্রেমিক জানান, তিনি মূলত সরকারি কলেজে পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন এবং সেখানেই তাদের দেখা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও নির্মাণ শ্রমিকদের বয়ান
ওই নারী অভিযোগ করেছিলেন যে, তাকে যখন জোর করে টেনে নেওয়া হচ্ছিল, তখন অনেকেই তা দাঁড়িয়ে দেখছিলেন। বিশেষ করে বন বিভাগের সামনে একটি ব্রিজের নির্মাণ কাজ চলায় সেখানে অনেক শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু ঘটনাস্থলে থাকা নির্মাণ শ্রমিকদের বক্তব্যে অসঙ্গতি পাওয়া যায়। শ্রমিকরা জানান, তারা রাত পর্যন্ত ঢালাইয়ের কাজ করছিলেন এবং এমন কোনো জোরজবরদস্তি বা টেনে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা তাদের চোখে পড়েনি। এমনকি ওই পথে কাউকে ঢুকতেও দেখেননি তারা। এই বক্তব্য ভুক্তভোগীর “সবাই দাঁড়িয়ে দেখছিল”—এই দাবির সত্যতা নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে।

প্রেমিকের জবানবন্দি: ছিনতাই নাকি পূর্বপরিকল্পনা?
ঘটনার সময় ওই নারীর সঙ্গে থাকা যুবক জানান, তারা খাবার খেয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তখন কয়েকজন ছিনতাইকারী তাদের ওপর হামলা চালায়। তিনি বলেন, “কিছু ছিনতাইকারী এসে আমাদের আক্রমণ করে। চিৎকার করলে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আমাদের মোবাইল ও মানিব্যাগ কেড়ে নেয়। এরপর মারধর করতে করতে আমাদের বন বিভাগের নির্জন এলাকায় নিয়ে যায়।”

যুবকটি আরও জানান, অপরাধীরা তাকে এবং ওই নারীকে আলাদা করে ফেলে। তাকে দূরে আটকে রাখা হয় এবং নারীকে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর তাদের আবার এক করা হয়। এ সময় অপরাধীরা তাদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে এবং হুমকি দেয় যে টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলা হবে। তবে ওই দীর্ঘ সময় মেয়েটির সঙ্গে কী ঘটেছে, তা তিনি দেখেননি বলে জানান। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে।

পুলিশের পদক্ষেপ ও গ্রেফতার
ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে পালং মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মামলায় একজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, “অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আমরা তদন্ত শুরু করি। প্রযুক্তির সহায়তায় এবং ঘটনাস্থলে কারা উপস্থিত ছিল তা শনাক্ত করে আমরা ইতিমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ঘটনাটি আসলেই ধর্ষণ, নাকি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ধর্ষণের নাটক সাজানো হয়েছে—তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

সামাজিক প্রতিক্রিয়া ও বিভ্রান্তি
ঘটনাটি নিয়ে বর্তমানে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। একদিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের অভিযোগ, অন্যদিকে ভুক্তভোগীর মিথ্যা পরিচয় ও পরকীয়া সম্পর্কের বিষয়টি জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। সচেতন মহলের মতে, অপরাধী যেই হোক, ছিনতাই বা শ্লীলতাহানি—উভয়ই গুরুতর অপরাধ। তবে নিজের পরিচয় গোপন করে মিথ্যা তথ্য দেওয়া তদন্তকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে পারে।


শরীয়তপুরের এই ঘটনাটি প্রমাণ করে যে, সব সময় যা দেখা যায় বা শোনা যায়, তা ধ্রুব সত্য নয়। ভুক্তভোগী নারী ও তার প্রেমিকের ওপর হামলা এবং ছিনতাইয়ের ঘটনাটি সত্য বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হলেও, ধর্ষণের অভিযোগ এবং পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যপ্রমাণের মধ্যে ফারাক রয়েছে। পুলিশি তদন্ত শেষেই নিশ্চিত হওয়া যাবে ঘটনার আসল রহস্য। তবে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা এবং প্রকৃত সত্য উদঘাটন করা এখন সময়ের দাবি, যাতে কেউ অপরাধ করে পার না পায়, আবার মিথ্যা তথ্যে কেউ বিভ্রান্ত না হয়।

বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন: